মহানবী (সা,) এর ১১জন স্ত্রী

                                       মহানবী (সা,) এর ১১জন স্ত্রী


মহানবী (সা,) এর ১১জন স্ত্রী
মহানবী (সা,) এর ১১জন স্ত্রী


প্রয়োজনে তিনি এসব বিয়ে

করেন। তাদের মধ্যে দুজন

খাদিজা ও জয়নব (রা.)

মহানবীর জীবদ্দশায়

ইন্তেকাল করেন। বাকিরা

সবাই নবীজি (সা.) এর

দুনিয়া ত্যাগের পর মারা

যান।

খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ

(রা.) : তিনি মহানবী (সা.) এর

প্রথম স্ত্রী। নবীজির

চারিত্রিক গুণাবলিতে

মুগ্ধ হয়ে খাদিজা (রা.)

তাকে বিয়ের প্রস্তাব

দেন। উভয় পরিবারের

সম্মতিতে বিয়ে সম্পন্ন

হয়। বিয়েতে খাদিজা (রা.)

এর চাচা আমর ইবনে আসাদের

প্রস্তাবে দেনমোহর ৫০০

দিরহাম নির্ধারণ করা হয়।

বিয়ের সময় রাসূল (সা.) এর

বয়স ছিল ২৫ আর খাদিজা

(রা.) এর বয়স ৪০ বছর। তার

জীবদ্দশায় তিনি আর বিয়ে

করেননি। কেবল ইবরাহিম

ছাড়া মহানবী (সা.) এর ছয়

সন্তানই তিনি গর্ভে ধারণ

করেছেন।

সাওদা বিনতে জামআ (রা.) :

খাদিজা (রা.) এর মৃত্যুর

পর অকস্মাৎ সন্তানাদি ও

সংসারের সব দায়িত্ব এসে

চাপে মহানবীর কাঁধে।

অপরদিকে সাওদা (রা.) এর

স্বামী মারা যাওয়ায়

তিনিও অসহায় হয়ে

পড়েছিলেন। এমতাবস্থায়

রাসূল (সা.) এর খালা

খাওলা বিনতে হাকিমের

মধ্যস্থতায় এ বিয়ে হয় দশম

হিজরিতে। মোহরানা ছিল

৪০০ দিরহাম। সাওদা (রা.) এর

বয়স তখন ৫৫ বছর।

আয়েশা বিনতে আবু বকর

(রা.) : একই বছর শাওয়াল মাসে

আয়েশা (রা.) কে বিয়ে

করেন রাসূল (সা.)। আরবে

কুসংস্কার ছিল বন্ধুর

কন্যাকে বিয়ে করা যাবে

না। রাসূল (সা.) তার

সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবু

বকর (রা.) এর কন্যা আয়েশা

(রা.) কে বিয়ে করে এ

কুসংস্কারের মূলোৎপাটন

করেন। আয়েশা (রা.) বলেন,

'আমাকে যখন নবী (সা.) বিয়ে

করেছেন তখন আমার বয়স ছয় বছর,

আমাকে তাঁর সংসারে যখন

নিয়েছেন তখন আমার বয়স নয়

বছর।' (বোখারি : ৩৮৯৪)। তাকে

ছাড়া নবী (সা.) আর কোনো

কুমারী নারীকে বিয়ে

করেননি।

হাফসা বিনতে ওমর (রা.) :

হাফসা (রা.) এর প্রথম

স্বামী ছিলেন মহানবী

(সা.) এর সাহাবি খুনাইস

বিন হুজাইফা সাহমি (রা.)।

তিনি বদর যুদ্ধে আহত হয়ে

মদিনায় ইন্তেকাল করেন।

ওমর (রা.) স্বামীহারা

যুবতী কন্যার ভবিষ্যৎ

নিয়ে উদ্বিগ্ন হন। ওমর (রা.)

বলেন, আমি ওসমান বিন

আফফানের কাছে হাফসার

প্রসঙ্গ উত্থাপন করলাম।

বললাম, তুমি চাইলে আমি

তোমার সঙ্গে হাফসার

বিয়ে দিতে চাই। তিনি

বললেন, আমি বিষয়টা ভেবে

দেখব। এরপর আমি কয়েক রাত

অপেক্ষা করলাম। তিনি

জানালেন, আমার কাছে এ

মুহূর্তে বিয়ে করা সঙ্গত

মনে হচ্ছে না। এরপর আমি

আবু বকরের কাছে গেলাম।

বললাম, তুমি চাইলে তোমার

সঙ্গে হাফসা বিনতে

ওমরের বিয়ে দিতে চাই।

আবু বকর মৌনতা

দেখালেন। আমি তার

নীরবতায় ওসমানের উত্তর

অপেক্ষা বেশি কষ্ট

পেলাম। এর কয়েক রাত পরে

রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে

বিয়ের প্রস্তাব দিলেন।

আমি তার সঙ্গেই বিয়ে

দিলাম। (বোখারি : ৪০০৫)।

বিবাহ সম্পন্ন হয় তৃতীয়

হিজরিতে। তার বয়স তখন ২১

বছর।

জয়নব বিনতে খুজাইমা (রা.) :

রাসূল (সা.) তাকে

হিজরতের ৩১তম মাসের

মাথায় বিয়ে করেন। তার

স্বামী ওহুদ যুদ্ধে

শাহাদাতবরণ করায় তিনি

শোকে মুষড়ে পড়েন। তার

বাবাও চিন্তায় পড়েন।

জানতে পেরে রাসূল (সা.)

কয়েকজন সাহাবিকে বিয়ের

প্রস্তাব দেন। কেউ

প্রস্তাবে সাড়া না

দেয়ায় তৃতীয় হিজরিতে

রাসূল (সা.) নিজেই তাকে

বিয়ে করে নেন। জয়নব (রা.)

এর বয়স তখন ৩০ বছর। বিয়ের

মাত্র তিন মাস পর তিনি

ইন্তেকাল করেন।

উম্মে সালামা (রা.) : ওহুদ

যুদ্ধে আবু সালামা (রা.)

শাহাদাতবরণের পর উম্মে

সালামা (রা.) চরম

অর্থকষ্টে পতিত হন। তিনি

অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

সন্তান প্রসবের পর আবু বকর

(রা.) তাকে বিয়ের

প্রস্তাব দিলে তিনি তা

ফিরিয়ে দেন। এটা দেখে

আর কেউ বিয়ের প্রস্তাব

দিতে সাহসী হলেন না।

ফলে উম্মে সালামা (রা.)

এর সংসারে অচলাবস্থা

দেখা দেয়। অনাথ মহিলা ও

তার এতিম সন্তানদের

দায়িত্ব নিতে রাসূল

(সা.) তাকে বিয়ের

প্রস্তাব পাঠান। উম্মে

সালামা (রা.) এতে রাজি

হন এবং আল্লাহর ইচ্ছায়

তার সব দুঃখ-বেদনা লাঘব

হয়। ৪ হিজরি সনের শাওয়াল

মাসে বিয়ে সম্পন্ন হয়।

বিয়ের সময় তার বয়স ছিল ৩৫

বছর।

জুয়ায়রিয়া বিনতে হারেস

(রা.) : বনু মুসতালিকের

যুদ্ধে তিনি মুসলিমদের

হাতে বন্দি হন। তিনি

দাসী হিসেবে সাবিত বিন

কায়েস (রা.) এর ভাগে

পড়েন। জুয়ায়রিয়া ছিলেন

সর্দারের মেয়ে, তাই তিনি

নিজের মুক্তিপণ

সম্পর্কে সাবিত (রা.) এর

সঙ্গে আলোচনা করে ৯

আওকিয়া স্বর্ণ ধার্য

করেন। তার কাছে এ অর্থ না

থাকায় তিনি

রাসূলুল্লাহর কাছে যান।

রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে

অর্থ দান করে মুক্ত করে

দেন। এ মহানুভবতায় মুগ্ধ

হয়ে তিনি ইসলাম গ্রহণ

করেন। কিন্তু এতে তার

পরিবারের সঙ্গে সব

সম্পর্ক ছিন্ন হয়। তিনি

অবর্ণনীয় সমস্যায় পড়েন।

তখন রাসূল (সা.) তাকে

বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে

বিয়ে করেন। এ সময়

মুসলিমদের কাছে বনু

মুসতালিকের ৬০০ বন্দি

ছিল। রাসূল (সা.) এর

শ্বশুরের গোত্রের

সম্মানার্থে সব

যুদ্ধবন্দিকে সাহাবিরা

মুক্তি দিয়ে দেন।

জয়নব বিনতে জাহাশ (রা.) :

আরবে পালিত ছেলেকে

নিজের ছেলে ভাবা হতো।

ফলে তার পরিত্যাজ্য বা

বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে

করা গর্হিত জ্ঞান করত। এ

কুসংস্কার দূর করতে

আল্লাহর নির্দেশে রাসূল

(সা.) তার পালিত পুত্র

জায়েদ ইবনে হারেসা (রা.)

এর তালাক দেয়া স্ত্রী

জয়নবকে বিয়ে করেন।

আল্লাহ বলেন, 'আপনি

লোকনিন্দার ভয়

করেছিলেন অথচ

আল্লাহকেই অধিক ভয় করা

উচিত। অতঃপর জায়েদ যখন

জয়নবের সঙ্গে সম্পর্ক

ছিন্ন করলো, তখন আমি

তাকে আপনার সঙ্গে

বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ করলাম,

যাতে মোমিনদের

পোষ্যপুত্ররা তাদের

স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক

ছিন্ন করলে সেসব

স্ত্রীকে বিবাহ করার

ব্যাপারে মোমিনদের

কোনো অসুবিধা না থাকে।

আল্লাহর নির্দেশ কার্যে

পরিণত হয়েই থাকে।' (সূরা

আহজাব : ৩৭)। হিজরি ৫ সনে

বিয়ে সম্পন্ন হয়।

উম্মে হাবিবা (রা.) :

আবিসিনিয়ায় হিজরতের পর

উম্মে হাবিবা (রা.) এর

প্রথম স্বামী খ্রিস্টান

হয়ে যায় এবং অতিরিক্ত

মদ্যপানের কারণে মারা

যায়। অপরদিকে তার পিতা

তখন মক্কার কাফেরদের

সর্দার। ফলে তিনি চরম

অসহায় হয়ে পড়েন ও অভাব-

অনটনের মধ্যে কাটাতে

থাকেন আবিসিনিয়ায়। এ খবর

পেয়ে রাসূল (সা.) বিয়ের

প্রস্তাবসহ ইবনে উমাইয়া

(রা.) কে বাদশা

নাজ্জাশির কাছে পাঠান।

নাজ্জাশি রাসূলুল্লাহর

পক্ষ থেকে মোহরানা আদায়

করে বিয়ে দিয়ে দেন।

উম্মে হাবিবা (রা.)

জাহাজযোগে মদিনায় চলে

আসেন। বিয়ে হয় হিজরি ৬

সনে। বিয়ের সময় বয়স

আনুমানিক ৩৬ বছর ছিল।

মায়মুনা বিনতে হারেস

(রা.) : মায়মুনা (রা


Tags

Post a Comment

0 Comments